যে কারণে সিলেটে ভয়াবহ বন্যা
প্রকাশিতঃ June 18th, 2022, 2:19 pm |
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বন্যার পানিতে ডুবে গেছে সিলেট নগরীর পথঘাট-লোকালয়। কোথাও পানি ছুঁয়েছে কোমর পর্যন্ত। এটি চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যা। একের পর এক বন্যায় বিপর্যস্ত এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। দুই জেলার লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি।
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে উঁচু স্থান, স্কুল বা আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন মানুষ। কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে-এক কথায় নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষ।
একদিনে বন্যার এমন ভয়াবহ রূপ আগে দেখেনি সিলেটবাসী। হতভম্ব ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষ। অবাক হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপ্রবণ এলাকার একটি চেরাপুঞ্জিসহ ভারতের আসাম মেঘালয়ে গত তিন দিনে প্রায় ২ হাজার ৫০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে, যা গত ২৭ বছরের মধ্যে তিন দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, সিলেট সংলগ্ন মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার। একই রাজ্যের শিলংয়ে ১০১, আসামের গৌহাটিতে ৪২ আর ধুব্রিতে ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। চেরাপুঞ্জিতে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হয়েছে ৬৭৪ মিলিমিটার।
প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট ঢল ভাটিতে থাকা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলকে ডুবিয়ে দিয়েছে – এখন এ কথা সবারই জানা।
প্রশ্ন উঠেছে, তবে সেই ঢলের পানি কেন সিলেট থেকে দ্রুত সরে দক্ষিণে নেমে যাচ্ছে না? পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত কেন হচ্ছে? সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়াবহতা দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করেছে কোন কারণে?
এ বিষয়ে পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মত, চার কারণে এবার ভয়াবহ বন্যায় নাকাল অবস্থা সিলেটের। সেগুলো হলো – নদীর নাব্যতা–সংকট, হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ ও স্লুইচগেট নির্মাণ, হাওর বিল ঝিল ভরাট, নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কাটা।
সে কারণে সমাধানের পথগুলো হচ্ছে – সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদ-নদী খনন করা এবং সিলেট নগরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক ছড়াগুলো দখলমুক্ত করে খনন করা। এভাবেই পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক পথ নিশ্চিত হবে।
সবচেয়ে বেশি জরুরি কালনী নদী খনন। কারণ সিলেটের বিশাল এলাকার পানি যায় শুধু এই কালনী নদী দিয়ে।
এ বিষয়ে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মুশতাক আহমদ বলেন, ‘সিলেট থেকে পানি বের করে দেওয়ার একমাত্র উপায় নদী খনন। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সঠিক নকশা ও পদ্ধতিতে সিলেটের নদীগুলো খনন করে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা বাড়ানো। পাশাপাশি নির্বিচারে সিলেটে পাহাড়-টিলা কাটা, পুকুর ভরাট থামানো উচিত। বিশেষ করে সিলেট এলাকার পানি বের হওয়ার জন্য যে একটামাত্র পথ আছে—অর্থাৎ কালনী নদী সেটাকে খনন করলেই দ্রুত বন্যার পানি সরে যেতে পারবে। প্রয়োজনে কিছু সংযোগ খাল যদি তৈরি করা যায়, তাহলেও পানি দ্রুত বের হবে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী কিম মনে করেন, ‘নির্বিচারে হাওর ও বিল ভরাট করায় পানি ধারণ ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। তাই মুষলধারে বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ধারণ করতে পারছে না সেগুলো।
তিনি বলেন, ‘পানি ধরে রাখা আমাদের অসংখ্য হাওর, বিল বা জলাধারগুলো সরকারি-বেসরকারিভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ কাজ আগে বন্ধ করতে হবে। এদিকে প্রথম দফা বন্যার পর দ্বিতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা নানাভাবে প্রকাশ করা হলেও সে বন্যা মোকাবিলায় সরকারি কোনো উদ্যোগের কথা জানা যায়নি। অথচ মানুষকে সতর্ক করা উচিত ছিল। দায়িত্বশীল মহল থেকে মানুষকে সতর্ক করা হলে এখন সিলেটের মানুষকে এমন দুরবস্থার মুখোমুখি হতে হতো না।’
সারি নদ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি আবদুল হাই আল হাদি বলেন, ‘মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের কারণে যে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়, এর সবই চলে আসে সিলেটে। সেই ঢলে আসা পাহাড়ি বালু-মাটি-পলি জমতে জমতে নদ-নদীগুলো প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এতে নদীগুলো ক্রমে সংকোচন ও ভরাট হয়েছে। পাশাপাশি যত্রতত্র স্লুইসগেট ও অবকাঠামো নির্মাণের কারণেও নদীর প্রবাহপথ আরও বেশি সংকুচিত হয়েছে। যে কারণে এবারের বন্যার এতো ভয়াবহতা। এ রকম পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে সিলেটের নদ-নদীগুলোর নাব্যতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। নদী দখলমুক্ত করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিল-ঝিল, হাওর-বাঁওড় ও জলাধার খনন করতে হবে।’
সিলেট অঞ্চলে এই মুহূর্তে দুটি বন্যার শিকার বলে জানিয়েছেন বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এখন সিলেটে ‘ডাবল’ (দুটি) বন্যা হচ্ছে। সুরমা-সুনামগঞ্জে এখন যে উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে তা ভয়ংকর রূপে আছে। এটি কালই (আজ) অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে প্রবাহিত হতে পারে, যদি গত ২ দিনের মতো পানি আসার প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
-
June 18, 2022 | 11:36 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : সিলেটের বিশ্বনাথ সদর উপজেলায় বন্যার পানিতে সাতটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ পানিবন্দী হয়ে বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 2:48 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান শুধু ২০২০ সালের বি.এড অনার্স প্রথম বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 2:46 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : সুনামগঞ্জের পর এবার সিলেটে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দুপুর ১২টার বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 2:33 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 2:28 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর (বর্ষা) প্রভাবে শনিবারও সারাদেশে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 2:23 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : সিলেটে বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। উজান থেকে আসা ঢলে বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 2:13 pm
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : প্রাণান্তকর চেষ্টার পরও সচল রাখা যায়নি সিলেটের কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র। ভারিবর্ষনের ফলে পানি ঢুকে পড়ায় বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 12:35 am
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে দ্বিতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 12:32 am
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত আটটার পর সারাদেশে দোকান, বিপণিবিতান, মার্কেট ও কাঁচাবাজার বন্ধ রাখার বিস্তারিত...
-
June 18, 2022 | 12:27 am
রাজনগর বার্তা রিপোর্ট : সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহরে অনবরত ঢুকছে পানি। পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহরের নতুন নতুন বিস্তারিত...
মতামত দিন