হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজমুল হক কামালকে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে রংপুর রেঞ্জে উপপুলিশ মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। আজ সোমবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন স্বাক্ষরিত আদেশে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
আজ সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শামসুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে ওসি নাজমুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত চলমান আছে। তদন্তাধীন বিষয়ে কিছু বলা উচিত নয়।’
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আদেশে বলা হয়, ‘হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ নাজমুল হক কামালকে বিভাগীয় নিয়ম-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড, অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে বিধি মোতাবেক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা ও বিভিন্ন সুবিধাদি পাবেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এর আগে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজমুল হক কামালের বিরুদ্ধে ‘শারদীয় দুর্গাপূজা’ ও ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’র অনুষ্ঠানের জন্য তিনটি কোম্পানির কাছে সাড়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় ১৪ অক্টোবর ‘৩ কোম্পানির কাছে সাড়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ওসির’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে তোলপাড় শুরু হয়। সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও ওসির এমন কাণ্ডে পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশের সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির নির্দেশে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম মুরাদ আলি বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শামসুল হকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ খলিলুর রহমান ও ডিএসবির ডিআই-১ (পুলিশ পরিদর্শক) মো. রফিকুল ইসলাম।
১০ অক্টোবর ওসি নাজমুল স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি চিঠিতে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় এলাকায় অবস্থিত হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, স্কয়ার ডেনিমস লিমিটেড এবং তাফরিদ কটন মিলসের কাছে সাড়ে তিন লাখ টাকা করে চাঁদা চেয়েছেন। তিনটি চিঠিরই কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। তবে ওসি নাজমুলের মতো ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারাও চিঠির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।